নার্সিং পড়ার যোগ্যতা ও সুবিধা অসুবিধা

 নার্সিং পড়ার যোগ্যতা ও  সুবিধা অসুবিধা

নার্সিং পড়ার যোগ্যতা ও  সুবিধা অসুবিধা

নার্সিং পড়ার জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলি প্রয়োজন হয়:

### ১. **শিক্ষাগত যোগ্যতা:**

   - **ডিপ্লোমা ইন নার্সিং:**  

     - এসএসসি (মাধ্যমিক) ও এইচএসসি (উচ্চমাধ্যমিক) উভয় পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে।

     - বায়োলজি, ফিজিক্স, ও কেমিস্ট্রিতে ভালো ফলাফল থাকতে হবে। 

     - ন্যূনতম জিপিএ: সাধারণত ৩.০ (প্রতি বোর্ড অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে)।

   - **ব্যাচেলর অফ সায়েন্স ইন নার্সিং (বিএসসি ইন নার্সিং):**  

     - এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে।

     - বায়োলজি, ফিজিক্স, এবং কেমিস্ট্রিতে ভালো ফলাফল থাকতে হবে।

     - ন্যূনতম জিপিএ: সাধারণত ৩.৫ (ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আলাদা হতে পারে)।

### ২. **বয়সসীমা:**

   - ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য সাধারণত ১৭-২২ বছরের মধ্যে হতে হয়।

   - বিএসসি নার্সিং-এর জন্য বয়সসীমা একটু বেশি হতে পারে, সাধারণত ১৭-২৪ বছর।

### ৩. **স্বাস্থ্যগত যোগ্যতা:**

   - শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।

   - নার্সিং পেশার চাহিদা অনুযায়ী কিছু পরীক্ষাও দিতে হতে পারে (উচ্চতা, ওজন, দৃষ্টি পরীক্ষা ইত্যাদি)।

### ৪. **অন্যান্য:**

   - সরকারি বা বেসরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তি হতে হলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

   - নার্সিং পেশার প্রতি আগ্রহ ও সেবামূলক মনোভাব থাকা জরুরি।

প্রতিষ্ঠান ও দেশের নিয়ম অনুযায়ী যোগ্যতা কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।


নার্সিং পড়ার সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি নিম্নরূপ:


সুবিধা

1. **চাকরির নিশ্চয়তা:**

   - নার্সিং একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পেশা। স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে নার্সদের চাহিদাও বাড়ছে, ফলে চাকরির সুযোগ অনেক বেশি।

2. **আন্তর্জাতিক কর্মক্ষেত্র:**

   - নার্সিং ডিগ্রি নিয়ে শুধুমাত্র দেশেই নয়, আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন দেশ নার্সদের জন্য উচ্চ বেতনের চাকরির অফার দেয়।

3. **উন্নতির সুযোগ:**

   - নার্সিংয়ের বিভিন্ন স্তর রয়েছে (ডিপ্লোমা, বিএসসি, এমএসসি), যা আপনার ক্যারিয়ার উন্নতির সুযোগ তৈরি করে।

4. **সেবার সুযোগ:**

   - নার্সিং এমন একটি পেশা যেখানে মানুষের সেবা করার সুযোগ থাকে, যা অনেকের জন্য মানসিক শান্তি ও তৃপ্তির উৎস।

5. **চাকরির বৈচিত্র্য:**

   - নার্সিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্র (হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্কুল, পাবলিক হেলথ, প্রাইভেট সেক্টর) এবং বিশেষায়িত ফিল্ডে (জরুরি সেবা, সার্জারি, পেডিয়াট্রিকস, মানসিক স্বাস্থ্য) কাজ করার সুযোগ থাকে।

6. **অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা:**

   - নার্সিং পেশায় তুলনামূলকভাবে ভালো বেতন পাওয়া যায়, বিশেষ করে অভিজ্ঞতা ও উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করার পর।


অসুবিধা

1. **কঠোর পরিশ্রম:**

   - নার্সিং পেশা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও শারীরিক পরিশ্রমের কাজ। দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা, রোগীদের দেখাশোনা করা, এবং মানসিকভাবে চাপ সামলাতে হয়।

2. **অস্বাভাবিক সময়সূচি:**

   - নার্সদের শিফটের কাজ করতে হয়, বিশেষ করে রাতের শিফট বা ছুটির দিনে। এটি ব্যক্তিগত জীবন ও পরিবারের সাথে ভারসাম্য বজায় রাখতে কঠিন হতে পারে।

3. **মানসিক চাপ:**

   - রোগীদের যত্ন নেওয়া এবং গুরুতর অবস্থায় থাকা মানুষের সাথে কাজ করার কারণে মানসিকভাবে চাপে থাকতে হয়। কঠিন পরিস্থিতি বা মৃত্যুর ঘটনা মানসিকভাবে কষ্টদায়ক হতে পারে।

4. **আপাত সেবার মানসিকতা:**

   - কখনও কখনও রোগী বা সহকর্মীদের সঙ্গে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। সবার সাথে সদ্ভাব বজায় রাখা চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

5. **সংক্রমণের ঝুঁকি:**

   - হাসপাতালে বা চিকিৎসা কেন্দ্রে কাজ করার সময় সংক্রমণ বা অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

6. **পেশাগত বৃদ্ধি সীমিত হতে পারে:**

   - উচ্চতর ডিগ্রি বা বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ ছাড়া, কর্মজীবনে উন্নতি বা উচ্চতর পদে যাওয়ার সুযোগ সীমিত হতে পারে।

নার্সিং একটি সেবামূলক, সম্ভাবনাময় ও সম্মানজনক পেশা হলেও এর জন্য কঠোর পরিশ্রম, মানসিক প্রস্তুতি, এবং মানুষের প্রতি সহানুভূতি দরকার।

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url